তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং | NCTB BOOK
Please, contribute to add content into ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম.
Content

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা

টেলিফোনকে ভারের সংযোগ থেকে মুক্ত করে ওয়্যারলেস প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসা বর্তমান জগতের একটি অনেক বড় অর্জন। সেই টেলিফোন যখন শুধু কথা বলা এবং ম্যাসেজ পাঠানোর মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে আরো অসংখ্য কাজে আমাদের সহায়তা করতে শুরু করেছে তখন সবার কাছে একটি নতুন জগতের উম্মোচন হয়েছে। মোবাইল ফোন এখন শখের কিছু নয়, এটি দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান বিশ্বে ওয়্যারলেসবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা চিন্তাও করা যায় না। পারস্পরিক যোগাযোগ, বিনোদন, শিক্ষা, পরিবহন বা চিকিৎসার কাজে একজন মানুষ ব্যক্তিগত পর্যায়ে যেভাবে স্মার্টফোনে ওয়ারলেসের সহায়তা নেয়, ঠিক একইভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা, দাপ্তরিক কাজ, আইন-শৃঙ্খলা, প্রতিরক্ষা বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় ব্যাপকভাবে ওয়ারলেস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

সমুদ্রগামী জাহাজ বা উড়োজাহাজ চালনায় ভূ-পৃষ্ঠের নিয়ন্ত্রণকারী স্টেশনের সাথে এ পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, অফিস-আদালত, ব্যবসা- বাণিজ্য, চিকিৎসা সেবা ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দক্ষতাবৃত্তিতে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের বহুমাত্রিক ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু। নিরাপত্তা বিশেষত অপরাধী শনাক্তকরণ অথবা ভ্রমণকারীর অবস্থান কিংবা কোন যানবাহন ট্র্যাক করার কাজে এ প্রযুক্তির প্রয়োজন। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ একই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা, কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়া ইন্টারনেটভিত্তিক আধুনিকতম তথ্যবিনিময় বা যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আইওটি (IOT Internet of Things)। ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) হচ্ছে এমন এক ধরনের ব্যবস্থা যা ইলেকট্রনিক্স, সফটওয়্যার, সেন্সর, নেটওয়ার্ক সংযোগের সাথে সংযুক্ত ফিজিক্যাল ডিভাইস যা পরিবহন, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, অ্যাকচুয়েটর এবং অন্যান্য ডিজিটাল আইটেমের নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত এবং তথ্য বিনিময় করতে সক্ষম। ফলে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে বিল্ডিং, হোম অটোমেশন, অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা, ম্যানুফেকচারিং, কৃষি, চিকিৎসা, এনার্জি ইত্যাদি সেক্টরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ এবং তদানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। একটি স্মার্ট রিস্ট ব্যান্ড পালস রেট, হাটবিট, স্ট্রেস লেভেল, কত সময় হাঁটাহাঁটি করা হলো এবং শারীরিক ওজন মাপার কাজ দ্রুত ও বিশ্বস্ততার সাথে করতে পারে।

Content added || updated By

ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং জগতে ব্লুটুথ হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা স্বল্প দূরত্বের মধ্যে তারবিহীনভাবে দুটি ডিভাইসের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে। ব্লুটুথ নেটওয়ার্কটির ব্যান্ডউইথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে কম হলেও এটি বহুল ব্যবহৃত। যে সব ডিভাইসে এই পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলোকে ব্লুটুথ ডিভাইস বলে। বর্তমানে ল্যাপটপ, ট্যাব, পিডিএ, স্মার্ট ফোনে ব্লুটুথ প্রযুক্তি আগে থেকে দেওয়া থাকে। এছাড়া ইদানীং মাউস, কীবোর্ড, হেডফোন সেট, স্পীকার ইত্যাদিতেও ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।

এটি একটি পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক প্যান ( PAN), 2.45 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর ব্যাপ্তি ৩ থেকে ১০ মিটার হয়ে থাকে। হাফ ডুপ্লেক্স মোডে এর ডেটা ট্রান্সমিশন রেট প্রায় 1Mbps ৰা তারচেয়ে বেশি। এটি স্থাপন করা সহজ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগারেশন করা হয়। ব্লুটুথ নেটওয়ার্ককে পিকোনেটও বলা হয় -এর আওতায় সর্বোচ্চ ৪ (আট) টি যন্ত্রের সাথে সিগন্যাল আদান-প্রদান করতে পারে, এর মধ্যে একটি মাস্টার ডিভাইস এবং বাকিগুলো ব্লেন্ড ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। কতকগুলো পিকোনেট মিলে আবার একটি স্ক্যাটারনেট গঠিত হতে পারে।

Content added By

Wireless Fidelity শব্দের সংক্ষিপ্ত রুপ Wi-Fi। (Wi-Fi শব্দটি স্বত্বাধিকারী Wi-Fi Alliance নামীয় একটি সংস্থার নির্ধারিত ট্রেডমার্ক) প্রযুক্তিটি বর্তমান সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়্যারলেস প্রযুক্তি যেটা উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারসহ কম্পিউটারের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে ডেটা আদান- প্রদান করে থাকে।

যেকোনো মানের Wi-Fi ডিভাইস পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারে। সে কারণে ডেটার নিরাপত্তার খানিকটা ঝুঁকি থাকে। এটি সাধারণত 2.4 থেকে 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর কভারেজ এরিয়া 50 থেকে 200 মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে এবং ব্যবহার সহজ হওয়ার কারণে একসাথে অনেক ব্যবহারকারী খুব সহজেই এই নেটওয়ার্কে সিগন্যাল জ্যাম তৈরি হতে পারে।

Content added By
Content updated By

Worldwide Interoperability for Microwave Access এর সংক্ষিপ্ত গ্রুপ হচ্ছে WiMAXI এটি সাধারণত 2 থেকে 66 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং 80 Mbps থেকে 1Gbps পর্যন্ত গতিতে ডেটা ট্রান্সফার রেট প্রদানে সক্ষম।

WIMAX এর প্রধান অংশ দুটি :

১. বেস স্টেশন, যেটি ইনডোর ডিভাইস এবং আউটডোর টাওয়ার নিয়ে গঠিত। প্রতিটি বেস স্টেশনের কভারেজ এরিয়া 50 থেকে 80km পর্যন্ত হয়ে থাকে।

 ২. অ্যান্টেনাযুক্ত WIMAX রিসিভার, যা কম্পিউটারে সংযুক্ত করা হয় যেটি ওয়্যারলেস নির্ভর হওয়ার পরিবহনযোগ্য।

এই প্রযুক্তিতে একটি একক বেস স্টেশনের মাধ্যমে বিশাল ভৌগোলিক এলাকায় হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া যায়। ওয়্যারলেস হওয়ার পোর্টেবলিটির সুবিধা পাওয়া যায় এবং এর রিসিভার সহজে বহনযোগ্য। বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসের মাধ্যমে শহর এবং গ্রামে পোর্টেবল ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রদান করে।

WIMAX নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। অনেক বিস্তৃত নেটওয়ার্ক হওয়ায় অন্যান্য নেটওয়ার্কের তুলনায় এটি ব্যয়বহুল এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি।

Bluetooth, Wi-Fi এবং WIMAX -এই তিনটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তির তুলনামূলক কার্যকারিতার ছক দেওয়া হলঃ

 

 

Content added By
Content updated By
Promotion